Friday, October 10, 2025

একজন বৃহত্তর ব্যক্তিত্বসম্পন্ন সালেসীয় পুরোহিত, একনিষ্ঠ মিশনারী ও ধর্মীয় শিক্ষাবিদ: শ্রদ্ধাঞ্জলি – ফা: লুচিয়ানো কলুসি এসডিবি

ধর্ম কেবল বিশ্বাস নয়, এটি মানুষের জীবনে প্রেম পরিবর্তনের শক্তি। ফা. লুচিয়ানো কলুসি এসডিবি

 

 

জীবন আহ্বান

 


ফাদার লুচিয়ানো কলুসি এসডিবি ছিলেন এক নিবেদিত সালেসীয় মিশনারী, আধ্যাত্মিক শিক্ষক সমাজকল্যাণের অগ্রদূত। এই মহান ব্যক্তিত্ব জন্মগ্রহণ করেন জানুয়ারি ১৯২৪ সালে, ইতালির এক সাধারণ কৃষি পরিবারে। সালেসীয় পরিবারে তিনি ছিলেন ছয়জন (ভাই-বোন) ধর্মীয় সদস্যের অন্যতম।

 ১৯৫০ সালে কৃষ্ণনগরের বিশপ রেভারেন্ড এল. আর. মোরো এসডিবি তাঁকে পুরোহিত রূপে অভিষিক্ত করেন এবং তাঁর দীর্ঘ ধর্মীয় জীবনের সূচনা ঘটে।

তিনি জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে সালেসীয় আদর্শ — “যুবদের জন্য, ভালোবাসায় কাজ করা” — এই মন্ত্রকে পাথেয় করে এগিয়ে চলেন।

ধর্মশিক্ষা শিক্ষাক্ষেত্রে তাঁর অবদান

ফাদার কলুসির অন্যতম শ্রেষ্ঠ অবদান হলোChild Catechesis” নামে একটি প্রামাণিক বিস্তারিত গ্রন্থ, যা ১৯৭৮ সালে রচিত হয়।


এটি শিশুদের জন্য ধর্মশিক্ষার একটি প্রামাণিক সুসংগঠিত নির্দেশিকা ছিল, যেখানে বিশ্বাস, নৈতিকতা আধ্যাত্মিকতার মূল দিকগুলো সহজ ভাষায় তুলে ধরা হয়। এর মাধ্যমে ছোট বাচ্চারাও আধ্যাত্মিক নৈতিক মূল্যবোধ অর্জন করতে সক্ষম হয়।

তিনি বিশ্বাস করতেন— “শিশুদের ধর্মশিক্ষা মানে তাদের মন হৃদয়ে ঈশ্বরের প্রেম রোপণ করা।

এই বইটি পরবর্তীতে বাংলা খ্রীষ্টীয় সমাজে ধর্মশিক্ষার মূল পাঠ্য হিসেবে ব্যবহৃত হয় এবং আজও এটি অনুপ্রেরণার উৎস।

 এছাড়া, মাদার তেরেজার  তত্ত্বাবধানে তিনি মিশনারী সিস্টারদের ধর্মশিক্ষাআর প্রশিক্ষণ দেন এবং বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি সংগঠনে সক্রিয় ভূমিকা পালন করেন। কলকাতায় নীতিকা ডন বস্কো ক্যাটেকেটিক্যাল ও মাল্টিমিডিয়া কেন্দ্রের পরিচালকের দায়িত্ব পালনকালে তিনি আধুনিক অডিও-ভিডিও এবং মাল্টিমিডিয়া উপকরণ তৈরি ও প্রচারে নেতৃত্ব দেন, যা ধর্মশিক্ষার আধুনিকীকরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা ফেলে। তদুপরি, বিভিন্ন ধর্মীয় কর্মসূচি সংগঠনে তাঁর অসাধারণ অবদান অতি প্রশংসিত হয়েছে।


ধর্মশিক্ষার আধুনিক পদ্ধতি প্রশিক্ষণের মানোন্নয়নে তাঁর অবদান ধর্মীয় সম্প্রদায়ের আধ্যাত্মিক উন্নয়নের পাশাপাশি সামাজিক ঐক্য বৃদ্ধি করে। তিনি সালেসীয় তরুণ সমাজের প্রতি গভীর মমত্তা আধ্যাত্মিক বিকাশের পাশাপাশি সমাজের অবহেলিত মানুষদের জন্য বাস্তবভিত্তিক উন্নয়নমূলক উদ্যোগ গড়ে তুলেছেন। তাঁর নেতৃত্বে ধর্মীয় শিক্ষা সামাজিক সেবার মধ্যে সুসমন্বয় প্রতিষ্ঠিত হয়ে বাঙালি খ্রীষ্টীয় সমাজে একটি শক্তিশালী আদর্শ স্থাপন হয়, যা সম্প্রদায়ের দীর্ঘস্থায়ী শান্তি উন্নয়নের ভিত্তি হিসেবে কাজ করছে।

প্রশাসনিক নেতৃত্ব সমাজসেবা

২০০০ থেকে ২০০২ সাল পর্যন্ত ফাদার কলুসি কৃষ্ণনগর ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল পদে আসীন ছিলেন। তাঁর দূরদৃষ্টিতা আধ্যাত্মিক দৃষ্টিভঙ্গির কারণে ধর্মপ্রদেশে শৃঙ্খলা ঐক্য বৃদ্ধি পায়।


তিনি ধর্মশিক্ষা প্রশিক্ষণ, স্বাস্থ্যসেবা, শিক্ষা সহায়তা আবাসন প্রকল্পের মাধ্যমে সমাজের দরিদ্র মানুষের পাশে দাঁড়ান।

এই সময়েই তাঁর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত হয়সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র” — যা, কৃষ্ণনগর ধর্মপ্রদেশের জন্য একটি সামাজিক-আধ্যাত্মিক অগ্রযাত্রার প্রতীক।

তিনি নিয়মিতভাবে বিভিন্ন ধরনের ধর্মশিক্ষা প্রশিক্ষণের  আয়োজন করতেন, যার মাধ্যমে ধর্মশিক্ষকরা সমাজের বাস্তব জীবনের সঙ্গে বিশ্বাসের সম্পর্ক আরও নিবিড় ভাবে বুঝতে পারতেন।

 তাঁর উদ্যোগে গড়ে ওঠে লো-রেট হাউজিং প্রকল্প এবং চালু হয় শিক্ষা স্বাস্থ্যসেবার স্পন্সরশিপ কার্যক্রম, যা গরিব শ্রমজীবী মানুষের জীবনমান উন্নত হবার পদ প্রশস্ত করে। এভাবে তিনি ধর্মশিক্ষা সমাজসেবার মধ্যে এক অভূতপূর্ব মেলবন্ধন গড়ে তোলেন।

 


সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র ও খ্রীষ্ট মন্দির: তাঁর চিন্তাধারার বাস্তব রূপ

১৯৯৪ সালে ফাদার লুচিয়ানো কলুসি মিসসিও, আইজিএসএস অন্যান্য দাতা সংস্থার সহায়তায় সঞ্জীবনীর নির্মাণ শুরু করেন। পরের বছর, ১৯৯৫ সালে, এটি তৎকালীন বিশপ লুকাস সরকার এসডিবি কর্তৃক আশীর্বাদপ্রাপ্ত হয়।


সঞ্জীবনী কেন্দ্রটি শুধুমাত্র প্রশিক্ষণ প্রতিষ্ঠান তা নয়এটি ছিল কৃষ্ণনগরের আধ্যাত্মিক, নৈতিক সাংস্কৃতিক বিকাশের কেন্দ্রবিন্দু। এখানে নানান ধরনের সেমিনার, রিট্রিট, সামাজিক যোগাযোগের প্রশিক্ষণ, নারীদের ক্ষমতায়ন যুব নেতৃত্বের প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত হত।

 


কেন্দ্রটির একটি বিশেষ বৈশিষ্ট্য ছিল এর অডিও-ভিজ্যুয়াল বিভাগ, যা গ্রামীণ এলাকায় ধর্মশিক্ষা প্রচারের জন্য ভ্রাম্যমাণ ইউনিট হিসেবেও কাজ করত।

ফাদার কলুসি বিশ্বাস করতেন যে, — “শিক্ষা তখনই জীবন্ত হয়, যখন তা মানুষের জীবনের বাস্তবতাকে স্পর্শ করে।


সঞ্জীবনী প্রশিক্ষণ কেন্দ্র আজও তাঁর স্বপ্নের সাক্ষ্য বহন করছেযেখানে আধ্যাত্মিকতা, সমাজসেবা শিক্ষা একত্রে বিকশিত হয়ে চলেছে।


সংস্কৃতিমূলক সুসমাচার প্রচারের একজন মিশনারী ক্যাটিকিষ্ট

 


ফাদার কোলুসির মিশনারী জীবন ধর্মশিক্ষামূলক শিক্ষা, পালকীয় যত্ন এবং সামাজিক উন্নয়নের প্রতি তাঁর নিবেদনের মাধ্যমে চিহ্নিত। তিনি নিম্নমূল্যের আবাসন প্রকল্প ও দারিদ্র্য বিমোচনের জন্য সহায়তা কর্মসূচির মতো উদ্যোগের মাধ্যমে মানুষের জীবনমান উন্নত করার চেষ্টা করেছেন ঠিকই। যদিও এই উদ্যোগগুলির নির্দিষ্ট সাফল্যের বিবরণ বা তথ্য সহজলভ্য নয়, তাঁর অবদান প্রশাসন, শিক্ষা এবং দাতব্য কার্যক্রমের ক্ষেত্রকে অন্তর্ভুক্ত করে—যা বিশ্বাস ও সামাজিক প্রয়োজনে সালেসীয় চরিত্রের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ।

 

পশ্চিমবঙ্গের একজন বিশিষ্ট মিশনারী, পালক ও ধর্মশিক্ষা কার্যক্রমের পথিকৃৎ হিসেবে ফাদার লুচিয়ানো কোলুসি অত্যন্ত বাস্তব ও দৃশ্যমান সেবা প্রদান করেছেন, বিশেষ করে কৃষ্ণনগর ধর্মপ্রদেশের ভিকার জেনারেল হিসেবে তাঁর কর্মকালের মাধ্যমে। স্থানীয় ভাষায় তাঁর দক্ষতা প্রমাণ করে যে তিনি জনগণের সংস্কৃতির সঙ্গে সম্পূর্ণভাবে আত্মস্থ হয়েছিলেন। তাঁর কৃতিত্বের মধ্যে রয়েছে বিশ্বাসগঠনের স্মৃতিস্তম্ভসমূহ—কলকাতায় নিতিকা ডন বস্কো, কৃষ্ণনগরে সঞ্জীবনী খ্রীষ্ট মন্দিরযেগুলি তাঁর মিশনারী ও সংস্কৃতিমূলক সুসমাচার প্রচারের দূরদর্শিতার জীবন্ত সাক্ষ্য। 

ধর্ম সমাজের সমন্বয়

ফাদার কলুসির অন্যতম সাফল্য ছিল ধর্মকে ব্যক্তিগত বিশ্বাস থেকে সামাজিক রূপে উত্তীর্ণ করা। তিনি বিশ্বাস করতেন, ধর্মশিক্ষার লক্ষ্য শুধু প্রার্থনা শেখানো নয় বরং মানুষের মধ্যে নৈতিকতা, সহানুভূতি ন্যায়বোধ গড়ে তোলা। সেই জন্য ধর্মীয় কার্যক্রমগুলো শুধু আধ্যাত্মিকতায় সীমাবদ্ধ না থেকে সামাজিক কল্যাণ ও মানবসেবায় ব্যাপক ভূমিকা নিতে শুরু করে সেই কারণে তার নেতৃত্বে ধর্মীয় নেতৃত্বের দৃষ্টিভঙ্গি 


সম্প্রসারিত হয়ে সমাজকল্যাণ ও মানবসেবার মাধ্যমে আত্মিক ও সামগ্রিক উন্নয়নের সমন্বয়ে রূপ নেয়, যা ধর্মকে ব্যক্তিগত বিশ্বাসের বাইরে নিয়ে গিয়ে সামাজিক পরিবর্তনের শক্তি হিসেবে প্রতিষ্ঠিত করে

তাঁর কর্মজীবনে ধর্মীয় শিক্ষা, সমাজসেবা এবং প্রশাসনের এক সুন্দর সমন্বয় লক্ষ্য করা যায়।

এই দৃষ্টিভঙ্গি বাঙালি খ্রীষ্টীয় সমাজে এক নতুন চিন্তাধারা প্রতিষ্ঠা করেবিশ্বাস মানবসেবার মিলনই প্রকৃত ধর্ম এই মন্ত্রই তিনি বিশ্বাস করতেন।

 

অন্যায় গ্রেপ্তার মানসিক দৃঢ়তা

২০০৫ সালে জীবনের শেষ অধ্যায়ে ফাদার কলুসি এক নির্মম ঘটনার সম্মুখীন হন। একটি প্রশাসনিক বিভ্রান্তি স্থানীয় অসন্তোষের ফলে তাঁকে অন্যায়ভাবে গ্রেপ্তার করা হয়যা সমগ্র ক্যাথলিক সম্প্রদায়কে ব্যথিত করে। বয়স্ক এই ধর্মযাজককে বিনা ব্যাখ্যায় থানায় নিয়ে যাওয়া হয় এবং পরে স্থানীয় মানুষদের প্রতিবাদে তাঁর মুক্তি মেলে।


কৃষ্ণনগরের বিশপ তৎকালীন সময়ে বলেন -“ফাদার লুচিয়ানোকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ একটি গুরুতর ভুল করেছে। এই ঘটনা আমাদের সমাজে গভীর আঘাত হেনেছে।

এই ঘটনায়ও ফাদার কলুসি নিজের শান্ত সহিষ্ণু মনোভাব দিয়ে সমাজে ক্ষমা ন্যায়ের বার্তা প্রেরণ করেন। তিনি কখনো প্রতিশোধ চাননিবরং তিনি দেখিয়েছিলেন, সত্যিকারের বিশ্বাসী কখনো ভয় পায় না।

উত্তরাধিকার প্রেরণা আজও জীবন্ত

২০১০ সালের অক্টোবর তিনি তাঁর ধর্ম জীবনের হীরকজয়ন্তী উদযাপন করেন এবং মাত্র নয় দিন পর ১১ অক্টোবর ২০১০ তাঁর পার্থিব যাত্রা শেষ হয়।


তাঁর জীবন ছিল ধর্ম, শিক্ষা মানবসেবার এক মহৎ সংকলন,  ছিল এক দীর্ঘ, পরিশ্রমী ফলপ্রসূ যাত্রাযেখানে ধর্ম, শিক্ষা মানবসেবা একত্রে বিকশিত হবার সুযোগ পেয়েছিল। তিনি যে বীজ রোপণ করেছিলেন, তা আজও বাঙালি খ্রীষ্টীয় সমাজে আধ্যাত্মিক আলো ছড়িয়ে দিচ্ছে।


ফাদার কোলুসির কাজের সাফল্যের মধ্যে রয়েছে—ধর্মশিক্ষার মৌলিক গ্রন্থ রচনা ও মাল্টিমিডিয়া ধর্মশিক্ষা উপকরণ তৈরি; এক সংকটময় সময়ে কৃষ্ণনগর ধর্মপ্রদেশ পরিচালনা করে প্যারিশ কাঠামো ও সাধারণ বিশ্বাসীদের অংশগ্রহণকে সুদৃঢ় করা; গ্রামীণ পর্যায়ে পৌঁছাতে নিয়মিতভাবে ধর্মশিক্ষকদের সহায়তা ও প্রশিক্ষণ প্রদান; নিম্নমূল্যের আবাসন ও স্পনসরশিপ কর্মসূচির মাধ্যমে সামাজিক উন্নয়নে সক্রিয় অংশগ্রহণ; এবং কলকাতার সেন্ট মাদার তেরেজার মতো বিশিষ্ট ব্যক্তিত্বের সঙ্গে সহযোগিতা করে তাঁর “মিশনারিজ অব চ্যারিটি” সংঘকে আধ্যাত্মিক ও ধর্মশিক্ষামূলক সহায়তা প্রদান।

সালেসীয় সহধর্মী, কৃষ্ণনগর ধর্মপ্রদেশের যাজকগণ, বিশ্বাসী, বন্ধু, পৃষ্ঠপোষক ও শুভানুধ্যায়ীরা সর্বসম্মতিক্রমে তাঁকে একজন বিশিষ্ট মিশনারী, পালক ও পশ্চিমবঙ্গের ধর্মশিক্ষা কার্যক্রমের পথিকৃৎ হিসেবে শ্রদ্ধাভরে স্মরণ করেন। তিনি বিশপ লুকাস সরকারের সঙ্গে মিলিত হয়ে নারী ধর্মীয় সংঘ গঠনে সহায়তা করেছেন এবং ধর্মপ্রদেশের সেমিনারির বিকাশেও গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছেন।

 উপসংহার


ফাদার লুচিয়ানো কলুসি এসডিবি ছিলেন এমন একজন সালেসীয় যাজক, যিনি ধর্মকে জীবনের আনন্দ, সমাজের উন্নতি মানবতার বিকাশের সঙ্গে এক সূত্রে গেঁথে ছিলেন। তিনি ধর্মশিক্ষায় আধুনিকতার দিগন্ত উন্মোচন করেন, ধর্মপ্রদেশে শৃঙ্খলা বজায় রাখতে সাহায্য করেন এবং সমাজে দরিদ্রদের উন্নয়নে ভালোবাসার স্পর্শ ছড়িয়ে দেন।

ফাদার লুচিয়ানো কোলুসিকে স্মরণ করা হয় একজন “মহান হৃদয়ের যাজক” হিসেবে, যিনি তাঁর জীবনের কর্মে প্রশাসনিক দক্ষতা, ধর্মশিক্ষার প্রতি উৎসাহ এবং সামাজিক মিশনকে সুন্দরভাবে সমন্বয় করেছিলেন। আজ তাঁকে স্নেহভরে স্মরণ করা হয় এক অভিজ্ঞ মিশনারী এবং বাংলার ধর্মশিক্ষা কার্যক্রমের একজন পথিকৃৎ হিসেবে—একজন বিশ্বস্ত আত্মা, যিনি পশ্চিমবঙ্গের ক্যাথলিক মণ্ডলীর এক নতুন মুখচ্ছবি গঠন করেছেন এবং এই স্থানীয় মণ্ডলী—ঈশ্বরের জনগণ—পুনর্গঠনের জন্য দৃঢ় ভিত্তি স্থাপন করেছেন।


ইতালির নিজ গৃহ ত্যাগ করে মাত্র ১৬ বছর বয়সে ভারতে আগমন থেকে শুরু করে ৮৬ বছরের পরিপূর্ণ জীবনের শেষ পর্যন্ত তিনি ভালোবাসার সুসমাচার প্রচার এবং নানাভাবে বিশ্বাসীদের শিক্ষাদানে নিজেকে সম্পূর্ণভাবে উৎসর্গ করেছিলেন। ভারতের ক্যাথলিক মণ্ডলী, বিশেষত কৃষ্ণনগর ও কলকাতায়, তাঁর অবদান চিহ্নিত হয় এক সহানুভূতিশীল দৃষ্টিভঙ্গিতে—যা বিশ্বাস, প্রশাসন ও সামাজিক-অর্থনৈতিক উন্নয়নের মাধ্যমে খ্রীষ্টীয় সমাজকে শিক্ষিত, সংগঠিত ও উন্নত করার চেষ্টা করেছে।

আজ কলকাতা সালেসিয় প্রদেশ তার ১০০ বছর পূর্তি উপলক্ষে এক মহান সাফল্যের সাক্ষী হচ্ছে, যখন তারা ২০২৫ সালের ১১ই অক্টোবর, তাঁর ১৫তম মৃত্যুবার্ষিকী উদযাপন করছে – একজন সাহসী মিশনারির জীবনের উজ্জ্বল স্মৃতি—যিনি নিজেকে সম্পূর্ণভাবে নিঃশেষ করেছিলেন, বিশেষ করে স্থানীয় মণ্ডলী ও দরিদ্রদের সেবায়।


আজও তাঁর জীবন আমাদের মনে করিয়ে দেয়—“বিশ্বাস যদি কর্মে প্রকাশ না পায়, তবে তা কখনোই পূর্ণ নয়।

তাঁর স্মৃতি বাঙালি খ্রীষ্টীয় সমাজে আলোকের উৎস, তাঁর আদর্শ বিশ্বাসের শক্তি মানবসেবার প্রতীক হয়ে চিরকাল বেঁচে থাকবে মানুষের অন্তরে। 

No comments:

Post a Comment

EMBRACING THE FUTURE WITH THE RECTOR MAJOR’S FOUR-POINT AGENDA FOR SALESIAN YOUTH MINISTRY

In a recent heartfelt goodnight talk, Fr. Rafael Bejarano, the General Councilor for Youth Ministry of the Salesian Congregation, shared the...